কালিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ-
ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি মেঝো ভাই প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ নেতা জি, এম শফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন পলাতক। বড় ভাই ওই স্কুলের নৈশ প্রহরী রফিকুল ইসলাম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ১২দিনের ছুটি শেষ হয়েছে। এই লম্বা ছুটি শেষ করে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সকল স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ খুললেও কালিগঞ্জ আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় যেয়ে দেখা গেছে প্রধান ফটক সহ তালাবদ্ধ অবস্থা বিরাজ করছে পুরা স্কুল। দেখা মিলেনি কোন ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকাকেও। বুধবার (৮ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে সরেজমিনে কালিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়। তালাবদ্ধ স্কুলে দেখা মেলেননি কোন-ছাত্রী বা শিক্ষকসহ কর্মচারীদেও। তবে ওই সময় দেখা মেলে ব্রাক এনজিও সাদপুর শাখা ব্যবস্থাপক বঙ্কিমচন্দ্র তরফদারের সাথে। তিনি ছাত্রীদের নিয়ে হ্যান্ডওয়াশ প্রোগ্রামের জন্য আলোচনা করতে এসে স্কুলের তালাবদ্ধ দেখে হতবাক হয়ে ফিরে যান। এ বিষয়ে তালাবদ্ধ প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জি,এম শফিকুল ইসলামের নিকট ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কিছু জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের নিকট জানতে চাইলে তিনিও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। গত সপ্তাহ জুড়ে অত্র স্কুলের নৈশ প্রহরী ছাড়া পূজার ছুটির ১২দিনব্যাপী ২৪ ঘন্টা বিদ্যালয়ের একটি বাতি জ্বালানো থাকলেও খোঁজ নেয়নি কেউ। ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক বহুল বিতর্কিত আওয়ামীলীগ নেতা শফিকুলের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তার অভিযোগ। নানাবিধ অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্ধ কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যে এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে । অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা তার অপসারণের দাবিতে স্কুল ও সড়ক অবরোধের কারণে দীর্ঘদিন পালিয়ে গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে ছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের বিচারের আশ্বাস দিলে রাস্তা অবরোধ থেকে মুক্তি মেলে সাধারণ জনতার। গত ২৭ সেপ্টেম্বর-২৫ সকালে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের নিকট তার আপন ছোট ভাই মনিরুজ্জামান নিজের জমি চাইতে গেলে সে এবং বড় ভাই রফিকুল ইসলাম মিলে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে, কুপিয়ে জখম করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। উক্ত ঘটনার মামলায় বড় ভাই কালিগঞ্জ আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী রফিকুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর হতে মেজ ভাই প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম পালিয়ে থাকলেও তাকে আর দেখা মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
Leave a Reply